অভয় নগরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর গৃহহীনদের বসতঘর নির্মাণের কাজে অনিয়মের অভিযোগ সাবেক ইউএনও’র বিরুদ্ধে: অভয়নগরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির গৃহহীনদের বসতঘর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্মাণকাজে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের সামগ্রী। উপকারভোগীদের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে টাকা। শুরু হয়নি চার ইউনিয়নের ৬টি বসতঘর নির্মাণের কাজ।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হতে বাস্তবায়নাধীন ‘বিশেষ এলাকার উন্নয়নের জন্য উন্নয়ন সহায়তা’ শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির গৃহহীনদের বসতঘর নির্মাণে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ২০টি বসতঘর নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় ৩৫ লাখ টাকা।

উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়নের ৩টি, সুন্দলী ইউনিয়নে ৪টি, চলিশিয়া ইউনিয়নে ৪টি ও পায়রা ইউনিয়নে ৩টি বসতঘরের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। ১৪টির মধ্যে ১১টি বসতঘর নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় নির্মাণের কাজ বন্ধ আছে।

 

শ্রীধরপুর ইউনিয়নে ১টি, বাঘুটিয়া ইউনিয়নে ১টি এবং শুভরাড়া ও সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নে ২টি করে মোট ৬টি ঘরের নির্মাণ কাজ এখনও শুরু হয়নি। ঘরপ্রতি নির্মাণ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।

এমন সংবাদের ভিত্তিতে সরেজমিনে চলিশিয়া ইউনিয়নের ঋষিপল্লীতে গিয়ে দেখা যায়, শ্রীমতি রানী দাস, চিত্তরঞ্জন দাস ও মিরা রানী দাসের বসতঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ আছে।

এ ব্যাপারে মীরা রানী দাস জানান, আমার ঘর নির্মাণকাজে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের ইট, বালু ও সিমেন্ট। ইট ও মাটি ভরাটের জন্য দিতে হয়েছে ৩ হাজার টাকা।

ভিত না করে ঘাসের ওপর গাঁথুনি দেওয়া হয়েছে। যা কয়েক দিন পর ভেঙ্গে পড়েছে। উপকারভোগী শ্রীমতি রানী দাস ও চিত্তরঞ্জন দাস একই অভিযোগ করেন।

জানা গেছে, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪টি বসতঘর নির্মাণের কাজ শুরু করেন সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুসেইন খান। কাজ শেষের পূর্বে ওই ১৪টি ঘরের বরাদ্দের টাকা তুলে নেয়ার অভিযোগ আছে।

এছাড়া নওয়াপাড়া বাজারের ব্যবসায়ীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ইট, বালু ও সিমেন্ট নেয়ার অভিযোগ পাওয়াগেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সিমেন্ট ব্যবসায়ী জানান, ঝামেলা এড়াতে ৩০০ বস্তা সিমেন্ট ফ্রি দিয়েছি। সেই সিমেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টির বসতঘর নির্মাণেকাজে।

 

এ ব্যাপারে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রিজিবুল ইসলাম জানান, ১৪টি ঘরের নির্মাণকাজের মধ্যে অনিয়মের অভিযোগে ১১টি ঘরের নির্মাণ কাজ বন্ধ আছে। পূনরায় ওই ১১টি ঘরের নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে অপর ৪টি ইউনিয়নের ৬টি বসতঘর নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আমিনুর রহমানের মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, আমি নতুন এসেছি। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে যেসব ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে তা পূণঃনির্মাণ করা হবে।

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের বসতঘরে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা যাবে না। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ্ ফরিদ জাহাঙ্গীর জানান, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণের অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। অনিয়ম-দুর্নীতি হলে তা প্রতিরোধ করা হবে।